মধরাতে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে কাশ্মির সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর আবারও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (৫ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। এর আগে রোববার রাতে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে এতে হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর থেকে টানা ১১ রাত ধরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর একতরফা গুলিবর্ষণ করছে। সর্বশেষ ৪ ও ৫ মে-র মধ্যবর্তী রাতে কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধার, নওশেরা, সুন্দরবনি ও আখনুর সেক্টরে ছোট অস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী “পাল্টা জবাব” দিয়েছে।
এছাড়া চলমান এই সংঘর্ষের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তান পরস্পরের একেকজন সেনাকে আটক করেছে। ভারতের বিএসএফ সদস্য পূর্ণম কুমার সাহু গত ২৩ এপ্রিল সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তানে প্রবেশ করলে তাকে পাকিস্তান রেঞ্জার্স আটক করে। এর পাল্টা হিসেবে ৩ মে রাজস্থানে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করে বিএসএফ।
এই গোলাগুলি এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন এপ্রিলের ২২ তারিখ পেহেলগামে ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে টানাপড়েন চরমে পৌঁছেছে। দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি নানা শাস্তিমূলক পদক্ষেপও নিচ্ছে।
মূলত পেহেলগাম হামলার পরদিনই ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কিছু পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে ছিল সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, আতারি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক অবনতির ঘোষণা। ভারতের দাবি, হামলার সঙ্গে সীমান্তপারের সন্ত্রাসীদের সংযোগ আছে।
জবাবে পাকিস্তান তার আকাশসীমা ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য বন্ধ করে দেয় এবং ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করে। এমনকি তৃতীয় দেশের মাধ্যমে বাণিজ্যও বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান।
এছাড়া পাকিস্তান ভারতের পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে এবং হুঁশিয়ারি দেয়, পানি বন্ধ করে দেওয়া হলে সেটি “যুদ্ধ ঘোষণার” শামিল হবে।
এই পরিস্থিতির মধ্যে পাকিস্তান গত শনিবার “আবদালি” ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। ভারতের কর্মকর্তারা এটিকে “খোলামেলা উসকানি” বলে মন্তব্য করেছেন। ৪৫০ কিমি রেঞ্জের এই ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তান “সিন্ধু মহড়ার” অংশ হিসেবে পরীক্ষা করেছে বলে জানিয়েছে।