মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস পাওয়ার পর কারামুক্ত হয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম। বুধবার (২৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় কারামুক্ত হন তিনি।মুক্তির পরপরই রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে একটি জনসভায় যোগ দেন।
মঙ্গলবার (২৭ মে) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে আজহারুল ইসলামকে খালাস দেন। বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই বহুল আলোচিত রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে, গত ৮ মে আপিল বিভাগে মামলাটির শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৭ মে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের অবসান ঘটল জামায়াত নেতার।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামকে ফাঁসির আদেশ দেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে সংঘটিত গণহত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগসহ ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হন তিনি। এসব অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়।
২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আজহারের পক্ষে ১১৩টি যুক্তি উপস্থাপন করে খালাস চেয়ে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। এ সময় আপিল বিভাগে ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিলসহ ২৩৪০ পৃষ্ঠার নথি দাখিল করা হয়।
২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখলেও পরবর্তীতে আজহারুল ইসলামের পক্ষ থেকে রিভিউ আবেদন করা হয়। সেই রিভিউ শুনানির ফলেই মঙ্গলবার তিনি খালাস পেলেন।
আজহারুল ইসলামের এই খালাস এবং কারামুক্তির পরপরই জনসভায় অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বরাবরই এই মামলাকে ‘প্রহসনের রায়’ হিসেবে দাবি করা হচ্ছিল।
জনসভায় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আজহারুল ইসলামের রাজনৈতিক সক্রিয়তার ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তার খালাস পাওয়া রায়ের প্রভাব রাজনীতির ময়দানে কীভাবে প্রতিফলিত হবে, এখন সেদিকেই দৃষ্টি সবার।