" পাকিস্তানের এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করল ভারত "

পাকিস্তানের এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করল ভারত



গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে পাকিস্তানের এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে ভারত। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে দেশ ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে নয়াদিল্লি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অবশ্য সরাসারি গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়নি। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই কূটনীতিক তার দাপ্তরিক দায়িত্ব ও পদমর্যাদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়— এমন কিছু কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। পাকিস্তানি ওই কর্মকর্তার নামও প্রকাশ করা হয়নি।

জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে ব্যাপক উত্তেজনা শুরু হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলায় ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন কয়েক ডজন মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি হলেও এখনও থমথমে অবস্থায় আছে ভারত ও পাকিস্তান।

গত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় হামলা চালিয়ে ২৬ জন পর্যটককে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। নিহত এই পর্যটকদের সবাই পুরুষ এবং অধিকাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী।

এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার একটি শাখা এই টিআরএফ।

অতর্কিত এই হামলার পর তাৎক্ষণিকভাবে সিন্ধু নদের পানি বণ্টনচুক্তি ও পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কয়েকটি কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয় ভারত। জবাবে ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ, ভিসা বাতিলসহ কয়েকটি পাল্টা পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তানও।

দুই দেশের মধ্যে চলমান এই উত্তেজনার মধ্যেই গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের অধিকৃত কাশ্মিরসহ বিভিন্ন এলাকায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এক সংক্ষিপ্ত সেনা অভিযান পরিচালনা করে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী। নয়াদিল্লির তথ্য অনুযায়ী, এ অভিযানে ৭০ জন পাকিস্তানি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। তবে পাকিস্তানের দাবি, নিহত হয়েছে ৩১ জন এবং আহত হয়েছে ৫৭ জন।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর তিন দিনের মধ্যে ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ শুরু করে পাকিস্তান। আরবি ‘বুনিয়ানি উল মারসুস’-এর বাংলা অর্থ সীসার প্রাচীর।

এদিকে পাল্টাপাল্টি এই সংঘাতের মধ্যেই তৎপর হয় যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের চাপে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ। ১০ মে শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে এই যুদ্ধবিরতি।

যুদ্ধবিরতির ২ দিন পর সোমবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সেই ভাষণে পাকিস্তানের প্রতি কঠোর বার্তা দিয়ে মোদি বলেন, ভারত শুধু তার অভিযান স্থগিত রেখেছে। যদি এর সুযোগ নিয়ে পাকিস্তান সীমান্তে কোনো প্রকার উসকানিমূলক তৎপরতা চালায়, তাহলে ফের অভিযান শুরু করবে ভারত।

সূত্র : আলজাজিরা
Previous Post Next Post

Random Manga

Ads

نموذج الاتصال