কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর উপত্যকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও ভারতের প্রতিক্রিয়া নিয়ে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দিল্লিতে নিজ বাসভবনে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, বৈঠকে অংশ নিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান। পরে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সভাপতিত্বে রাজনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিএস) বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
সিসিএস-এ আরও উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং সড়ক পরিবহণ, স্বাস্থ্য, কৃষি ও রেল মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে পর্যটকবহরে চালানো হামলায় ২৬ জন নিহত হয়, যেটি ২০০০ সালের পর উপত্যকায় সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার একটি। হামলার দায় স্বীকার করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)। ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে এর জন্য দায়ী করলেও ইসলামাবাদ তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
হামলার পর থেকেই নয়াদিল্লি কূটনৈতিকভাবে ইসলামাবাদের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। সীমান্ত বন্ধ, পাকিস্তানি কূটনীতিক কমানো, ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ছয় দশকের পুরোনো সিন্ধু পানি চুক্তির বাস্তবায়ন স্থগিতসহ একাধিক পদক্ষেপ নেয় ভারত।
জবাবে পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে পাকিস্তানও। দেশটি আকাশসীমা ও ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিত করেছে, যা দীর্ঘদিনের চুক্তিগুলোর কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এরই মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখায় দুদেশের বাহিনীর মধ্যে বেশ কয়েকবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। এক বিবৃতিতে বলা হয়, ওয়াশিংটন ভারত ও পাকিস্তানকে দায়িত্বশীল অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে এবং পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সীমান্ত উত্তেজনা, কূটনৈতিক টানাপড়েন এবং সেনা তৎপরতা দুই দেশের সম্পর্ককে ফের অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে। মোদীর ডাকা এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক থেকে তাই গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনা রয়েছে।