" জামায়াত কি সত্যিই ভারতের ফাঁদে পা দিয়েছে! ড. ফয়জুল হক যা বললেন "

জামায়াত কি সত্যিই ভারতের ফাঁদে পা দিয়েছে! ড. ফয়জুল হক যা বললেন

জামায়াতে ইসলামী নিয়ে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক আলোচনার প্রেক্ষাপটে আলোড়ন তুলেছেন বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. ফয়জুল হক। এক অনলাইন টকশোতে তিনি জামায়াতের অতীত ভূমিকা, বিচার, ভারতীয় প্রভাব এবং বর্তমান রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করেন। 

সম্প্রতি এক অনলাইন টকশোতে ড. ফয়জুল হক বলেন,“যেখানে জামায়াতে ইসলামীর ১১ জন ব্যক্তি ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলে গিয়েছে, সেই দলকে বাংলাদেশের কোনও ব্যক্তি একমাত্র শেখ হাসিনা, ভারতের নরেন্দ্র মোদি ছাড়া,যদি কোনও সুপুত্র হয়, বাংলাদেশের কোনও রাজনীতিবিদ বলতে পারে না যে জামায়াত ভারতের ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়েছে। কারণ ভারতের ফাঁদে পা দেয় নাই বিধায় জামায়াতের এই নেতাগুলোকে হত্যা করা হয়েছে।”

তিনি বলেন,“বাংলাদেশের ৫ই আগস্টের পূর্বে যে এক ধরনের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান ছিল, সেই ঐক্যবদ্ধ অবস্থানটা যাতে আবার স্থায়ী রূপ লাভ না করে, সে কারণে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন চক্রান্ত এখনো চলমান। যেমন ২০০৬ সাল পর্যন্ত চার দলীয় জোট ছিল। বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে ঐক্য ছিল। এই ঐক্যের ফাটল ধরানোর জন্য দেশি-বিদেশি চক্রান্ত ছিল এবং সেই চক্রান্তে আত্মসমর্পণ না করার কারণেই তৎকালীন সময় জামায়াতের নেতৃবৃন্দকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন,“দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ‘আনটিল টুডে’ তাকে এই পাঁচ তারিখের আগ পর্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় জেলের মধ্যে বন্দি থাকতে হয়েছে এবং এক প্রকার গৃহবন্দী অবস্থায় ছিল। শেখ হাসিনা শুধু মৃত্যুর অপেক্ষায় ছিল,যেন খালেদা জিয়া যেকোনো সময় মারা যান এবং অট্টহাসি করে এটাই বলেছিলেন যে ‘ওনার বয়স হয়েছে, চিকিৎসার দরকার নাই’।’’

ড. ফয়জুল মন্তব্য করেন,“এই যে ষড়যন্ত্রগুলো ছিল, সেই ষড়যন্ত্রগুলো থেকে তারা যখন বুঝতে পেরেছে, সফল হয়েছে,তখনই কিন্তু আমরা এই মহাবিপদের মধ্যে ছিলাম গত ১৬ বছর। আজ আবার নতুন করে পাঁচ তারিখের পরে, যখন তারা যে কোনও মূল্যে দেখলো যে বাংলাদেশে বিজয় তো হয়ে গেল, আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেল, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেল ভারত হতভম্ব হয়ে গিয়েছে। তার কাছে কোনও মেসেজ ছাড়া এত ধরনের একটা ঘটনা ঘটছে। হাসিনার চাইতেও সবচাইতে ভারত কষ্ট বেশি পেয়েছে। ওর গালের উপরে একটা জুতার থাপ্পড় মেরে দিয়েছে বাংলাদেশের জনগণ। এবং নরেন্দ্র মোদির কলিজাটা মনে হয় যেন ছিঁড়ে গিয়েছে, মানে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।”

তিনি বলেন,“আওয়ামী লীগ যা কষ্ট পেয়েছে, সারা বাংলাদেশের নাগরিক, আওয়ামী লীগের সমর্থকরা মিলে।তার চাইতে বেশি কষ্ট পেয়েছে ভারত এবং ভারতের দালাল নরেন্দ্র মোদি। সেই জায়গা থেকে আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র আঁকা শুরু করেছে। কিভাবে এখন ষড়যন্ত্র সফল করা যায়, একটাই সেটা হচ্ছে রাজনীতিবিদদেরকে বিতর্কিত করা।”

ড. ফয়জুল মনে করেন,“আজকের বাংলাদেশের পরিস্থিতিটা হচ্ছে,কিছু কিছু ইউটিউবার, কিছু কিছু অনলাইনে বিভিন্নভাবে আমার মনে হচ্ছে, এটা একটা মহাপরিকল্পনার অংশ। যদি বিএনপি-জামায়াত এখনই সতর্ক অবস্থানে না যেতে পারে, তাহলে যাদেরকে তারা মাথায় তুলে নেচেছে, তারাই তাদের পতনের জন্য যথেষ্ট হবে। তাদেরকে বিতর্কিত করতে তারাই যথেষ্ট হবে।”

তিনি বলেন,“কেন? এই কথাগুলো দুঃখ নিয়ে বলতে হচ্ছে। যেখানে জামায়াতে ইসলামীর ১১ জন ব্যক্তি ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলে গিয়েছে, সেই দলকে বাংলাদেশের কোনও ব্যক্তি-একমাত্র শেখ হাসিনা, ভারতের নরেন্দ্র মোদী ছাড়া,যদি কোনও সুপুত্র হয়, বাংলাদেশের কোনও রাজনীতিবিদ বলতে পারে না যে জামায়াত ভারতের ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়েছে। কারণ ভারত তো ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দেয় নাই বিধায় জামায়াতের এই নেতাগুলোকে হত্যা করা হয়েছে।দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে ইনজেকশন করে হত্যা করা হয়েছে”,মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন,“এখন যদি আপনি নাটক-সিনেমার মত সুন্দর করে কাটছাঁট করে একজনকে চরিত্র হরণের জন্য এটা-সেটা বলেন,এটা জাতি কিভাবে নিবে? আমাদের জাতির মূল সমস্যা, রাজনীতিটাকে আমরা নিয়ে যাচ্ছি আমার দিকে। কিন্তু এই রাজনীতিবিদের চরিত্র হরণ করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেটা আমরা জানি না।”

তিনি বলেন,“আমাদেরকে অবশ্যই সমালোচনা করতে হবে। যেসব আলোচনাগুলো জাতির জন্য হতাশা হবে, সেই সকল জায়গায় আমরা সমালোচনা করব। কিন্তু সমালোচনা করতে গিয়ে আমার বাবার, বাবার পা কেটে ফেলবো,পাশের বাড়ির লোক এসে আমার বাড়ি দখল নেবে,এই সকল সমালোচনার পক্ষে আমি না।”

Previous Post Next Post

Random Manga

Ads

نموذج الاتصال