২০০৯ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার এক বছরের মাথায় ২০১০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ৯টি দুর্নীতির মামলা বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। কিন্তু পরবর্তীতে ওইসব রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করেনি দুদক। বিগত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর হাইকোর্টের ওইসব রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সচল করা হচ্ছে সব মামলা।
একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে জানা গেছে, খুলনায় ভাসমান বিদ্যুৎকেন্দ্র দুর্নীতি মামলায় আপিল এরই মধ্যে করা হয়েছে। হাইকোর্টের রায়ের ৫ হাজার ৪৫২ দিন পর এই আপিল দায়ের করা হয়। এর সঙ্গে দীর্ঘদিন পর আপিল দায়ের করার ব্যাপারে ‘বিলম্ব মার্জনা’ চেয়ে একটি আবেদনও করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আপিল মামলাটি শুনানির জন্য উত্থাপন করা হয়। পরে আদালত এ বিষয়ে আগামী ১৮ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন। ওইদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে। বিলম্ব মার্জনার আবেদনে বলা হয়েছে, ‘শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকায় তার বিরুদ্ধে কারও পদক্ষেপ নেওয়ার সাহস ছিল না। পটপরিবর্তনের পর দুদক আপিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।’
চেম্বার আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেছেন আইনজীবী আসিফ হাসান এবং মামলাটিতে ফাইলিং লইয়ার হিসেবে রয়েছেন অ্যাডভোকেট সত্য রঞ্জন মণ্ডল। ২০১০ সালে যেসব মামলা হাইকোর্ট বাতিল করে রায় দিয়েছিলেন, সেসব রায়ের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে আপিল দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছে দুদুক সূত্র।
বিচারপতি শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ তিন মাসে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা পাঁচটি মামলা বাতিল করেছিলেন। মামলাগুলো হলো ফ্রিগেট (যুদ্ধজাহাজ) ক্রয় দুর্নীতি মামলা, মেঘনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্র দুর্নীতি মামলা, নাইকো দুর্নীতি মামলা, ভাসমান বিদ্যুৎকেন্দ্র দুর্নীতি মামলা ও বেপজায় পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির মামলা। একই সময়ে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের হাইকোর্টের অপর বেঞ্চ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চারটি মামলা বাতিল করে দেন। মামলাগুলো হলো নভোথিয়েটার দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত তিনটি মামলা ও মিগ যুদ্ধবিমান ক্রয়সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগের মামলা। এই ৯টি মামলা সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।