পিলখানা হত্যাকাণ্ড তদন্তে গঠিত কমিশনের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমিশনের প্রধান, সাবেক বিডিআর মহাপরিচালক এ এল এম ফজলুর রহমান জানিয়েছেন, এই ঘটনার পেছনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের দিকটি জাতির সামনে স্পষ্ট করা হবে।
তিনি বলেন, “কোনো প্রভাব বা চাপের কাছে আমরা নতি স্বীকার করব না। কারণ এটি একটি জাতীয় সমস্যা। হাজার বছরে এমন একটি ঘটনা ঘটেনি যেখানে এত অল্প সময়ে এত বড় অবিচার এবং গণহত্যা হয়েছে।”
কমিশন প্রধান জানিয়েছেন, পিলখানার বিদ্রোহে ক্ষতিগ্রস্ত, নির্যাতিত এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। তদন্তের কার্যক্রমে দেশি-বিদেশি আইন বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা চারজন আইন বিশেষজ্ঞকে যুক্ত করতে বলেছি। এর মধ্যে একজন বাংলাদেশের সিভিল আইন বিশেষজ্ঞ, একজন সামরিক আইন বিশেষজ্ঞ এবং দুজন আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ থাকবেন। বিশেষ করে বিদেশি ষড়যন্ত্রের দিকটি শনাক্ত করার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
কমিশনের কাজ চলাকালে সংশ্লিষ্ট কারও দেশত্যাগ ঠেকাতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে কি না—এ বিষয়ে এ এল এম ফজলুর রহমান বলেন, “তদন্তের স্বার্থে এবং দেশের স্বার্থে প্রয়োজন হলে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বিষয়ে কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
বিদ্রোহে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা কোনো দেশকে আগে থেকেই চিহ্নিত করতে চাই না। নিরপেক্ষভাবে কাজ করে প্রমাণের ভিত্তিতে মতামত দেব। দেশের ভেতরে যারা এই ষড়যন্ত্রে জড়িত, তারা কমিশনের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হবেন। বিদেশে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হবে। প্রয়োজনে তদন্তের স্বার্থে সেসব দেশে প্রতিনিধি দল পাঠানো হবে।”
এ এল এম ফজলুর রহমান গণমাধ্যমকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “আপনারা আমাদের বক্তব্য ইতিবাচকভাবে প্রচার করবেন। নেতিবাচক প্রচার জাতীয় উদ্দেশ্য ব্যাহত করতে পারে।”
প্রথম বৈঠকে কমিশনের সদস্যরা পরিচিত হন এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। কমিশনের কাজ পরিচালনার জন্য কিছু আনুষ্ঠানিক চিঠিপত্র প্রস্তুত করার কাজ শুরু হয়েছে।
এই তদন্তের মাধ্যমে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পেছনের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের প্রকৃত কারণ উদঘাটিত হবে বলে প্রত্যাশা করছে জাতি।
Tags
জাতীয়